বাংলাদেশের কলেজ পর্যায়ের শিক্ষায় যদি কারও নাম প্রথমে উঠে আসে, তবে তা নিঃসন্দেহে নটর ডেম কলেজ। শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও একাডেমিক উৎকর্ষের এক অনন্য সমন্বয় এই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক দশক ধরে দেশের সেরা শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে অবস্থান করছে। শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, একটি অনুপ্রেরণা — যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনের ভিত্তি গড়ে তোলে দৃঢ়ভাবে। যারা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে একটি মানসম্পন্ন শিক্ষার পাশাপাশি সুশৃঙ্খল জীবন গঠনে আগ্রহী, তাদের জন্য নটরডেম কলেজ নিঃসন্দেহে একটি স্বপ্নের বিদ্যাপীঠ। চলুন, এই স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে একটি বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
প্রতিষ্ঠা ও পরিচিতি
১৯৪৯ সালে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে রোমান ক্যাথলিক চার্চের পুরোহিতদের দ্বারা নটরডেম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৪ সালে এটি মতিঝিলে বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হয়। ‘নটর ডেম’ একটি ফরাসি শব্দগুচ্ছ, যার অর্থ ‘Our Lady’ (আমাদের মহীয়সী নারী) – এটি যিশুর মা মেরিকে নির্দেশ করে। কলেজের মূলমন্ত্র হলো – “Diligite Lumen Sapientiae” অর্থাৎ “জ্ঞানের আলোকে ভালোবাসো”। এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করেই কলেজটি গত সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে জ্ঞান বিতরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
- প্রতিষ্ঠিত: ১৯৪৯ সাল
- অবস্থান: আরামবাগ, মতিঝিল, ঢাকা
- পরিচালনা: কংগ্রেগেশন অব হলি ক্রস (Congregation of Holy Cross), রোমান ক্যাথলিক ধর্মগোষ্ঠী
- মোট বিভাগ: বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা
- ধরন: শুধুমাত্র ছেলেদের জন্য
- ওয়েবসাইট: https://ndc.edu.bd/
নটর ডেম কলেজের আদর্শ মূলত ধর্মীয় মূল্যবোধ, মানবিক গুণাবলি ও শৃঙ্খলার সমন্বয়ে গড়ে তোলা। এখানকার শিক্ষার্থীরা শিক্ষা, নেতৃত্ব, সমাজসেবা ও সংস্কৃতিতে নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তোলে।
নটরডেম কলেজের বিশেষত্ব
নটরডেম কলেজের প্রধান পরিচিতি তার একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের জন্য। প্রতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এই কলেজের শিক্ষার্থীরা ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করে। এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ:
১. শৃঙ্খলাবদ্ধ পরিবেশ:
নটর ডেম কলেজের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর কঠোর শৃঙ্খলা ও নিয়মনীতি। সময়মতো ক্লাস, ইউনিফর্ম, পরিচ্ছন্নতা, শ্রদ্ধাশীল আচরণ ইত্যাদি সবকিছুর প্রতি কঠোর নজরদারি রয়েছে।
২. যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষকবৃন্দ:
কলেজের শিক্ষকমণ্ডলী অত্যন্ত যোগ্য, অভিজ্ঞ এবং নিবেদিতপ্রাণ। তারা শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকভিত্তিক শিক্ষাদানই করেন না, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান আহরণের আগ্রহ তৈরি করেন।
৩. সমন্বিত পাঠ্যক্রম:
জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করার পাশাপাশি কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজস্ব কিছু মানদণ্ড বজায় রাখে। নিয়মিত ক্লাস টেস্ট, পর্ব পরীক্ষা এবং মডেল টেস্ট শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করে তোলে।
৪. বিজ্ঞান শিক্ষায় বিশেষত্ব:
বিজ্ঞান বিভাগে নটরডেম কলেজের খ্যাতি দেশজোড়া। তাদের সুসজ্জিত ল্যাবরেটরি এবং ব্যবহারিক ক্লাসের উপর বিশেষ গুরুত্ব শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলে।
৫. মনিটরিং:
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার অগ্রগতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং প্রয়োজনে অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়।
৬. নেতৃত্ব গঠনের অনুশীলন:
শুধু একাডেমিক শিক্ষা নয়, নটর ডেম শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, নেতৃত্ব, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও আত্মনির্ভরশীলতা গঠনে উৎসাহিত করে।
৭. সহশিক্ষা কার্যক্রম:
বিভিন্ন ক্লাব যেমন বিজ্ঞান ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব, সাহিত্য ক্লাব, ড্রামা ক্লাব, এনডিসি স্কাউটস — শিক্ষার্থীদের বহুমাত্রিক প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করে।
৮. সামাজিক সেবা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি:
রক্তদান কর্মসূচি, অসহায়দের সাহায্য, পরিবেশ রক্ষা ইত্যাদি কাজে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে একটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা হয়।
নটরডেম কলেজ: ক্যাম্পাস জীবন ও সহশিক্ষা কার্যক্রম
একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি নটরডেম কলেজ সহশিক্ষা কার্যক্রমের উপরও সমান গুরুত্ব দেয়া হয়। এটি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ, নেতৃত্ব গুণাবলী তৈরি এবং সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। নটরডেম কলেজের উল্লেখযোগ্য ক্লাব ও কার্যক্রম হলো:
- ডিবেটিং ক্লাব: দেশের অন্যতম সেরা বিতার্কিক দল তৈরিতে এই ক্লাবের অবদান অনস্বীকার্য।
- বিজ্ঞান ক্লাব: বিজ্ঞান মেলা, অলিম্পিয়াড আয়োজন ও অংশগ্রহণে সক্রিয়।
- সাংস্কৃতিক ক্লাব: সংগীত, নাটক, আবৃত্তিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
- আউটরিচ প্রোগ্রাম (সেতু): সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য শিক্ষামূলক ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
- ন্যাচার স্টাডি ক্লাব, ফটোগ্রাফি ক্লাব, বিজনেস ক্লাব, ইংলিশ ক্লাব, আইটি ক্লাব সহ আরও বিভিন্ন ক্লাব শিক্ষার্থীদের আগ্রহ অনুযায়ী দক্ষতা বিকাশের সুযোগ করে দেয়।
- বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও বিভিন্ন ইনডোর-আউটডোর খেলার সুব্যবস্থা রয়েছে।
নটরডেম কলেজের শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা:
নটরডেম কলেজের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর কঠোর শৃঙ্খলা। শিক্ষার্থীদের সময়ানুবর্তিতা, পোশাকবিধি (ড্রেস কোড), আচরণবিধি এবং ক্লাসে উপস্থিতির ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত সচেতন। এই শৃঙ্খলা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং দায়িত্ববোধ তৈরি করে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নৈতিক শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধের উপরও জোর দেওয়া হয়।
নটরডেম কলেজের অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা:
নটর ডেম কলেজের বিশাল গ্রন্থাগারে রয়েছে হাজার হাজার বই, জার্নাল ও ম্যাগাজিন যা ছাত্রদের জ্ঞানের পরিধি বিস্তারে সাহায্য করে। সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি এবং পদার্থবিদ্যার জন্য রয়েছে আধুনিক ল্যাব সুবিধা। সবুজে ঘেরা শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাসটি শিক্ষার জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। এছাড়াও কলেজের চারপাশে নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা রয়েছে। কলেজটিতে রয়েছে:
- সুপরিসর শ্রেণীকক্ষ
- আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ বিজ্ঞানাগার (পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, আইসিটি ল্যাব)
- সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও রিডিং রুম
- খেলার মাঠ
- অডিটোরিয়াম
- ক্যাফেটেরিয়া
- প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা
নটরডেম কলেজ: শিক্ষক ও পাঠদান পদ্ধতি
- কলেজে রয়েছে অভিজ্ঞ, দক্ষ ও ছাত্রবান্ধব শিক্ষকবৃন্দ।
- শ্রেণিকক্ষে তাত্ত্বিক পাঠদানের পাশাপাশি ভর্তি প্রস্তুতি উপযোগী পাঠ ও মডেল টেস্ট নেওয়া হয়।
- শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধানে শিক্ষকেরা আলাদাভাবে সময় দেন।
নটরডেম কলেজ ভর্তি প্রক্রিয়া
নটর ডেম কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রাথমিক বাছাইয়ের পর লিখিত বা এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হয়। এখানে ভর্তির সুযোগ পাওয়াকে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক অত্যন্ত গৌরবের বিষয় বলে মনে করেন। প্রতিবছর প্রায় ৩০,০০০-এর বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করে, অথচ ভর্তি নেওয়া হয় মাত্র প্রায় ২২০০ জনকে।
আবেদন ও বাছাই প্রক্রিয়া:
১. আবেদন পদ্ধতি:
ভর্তির আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে করতে হয়। সাধারণত SSC পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরপরই আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়।
২. বাছাই পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি:
নটর ডেম কলেজ অন্য অনেক কলেজের তুলনায় ব্যতিক্রম, কারণ এখানে শুধুমাত্র SSC রেজাল্টের ভিত্তিতে নয়, লিখিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়। ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান/ব্যবসা/মানবিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন থাকে।
৩. বিভাগভিত্তিক ভর্তির মানদণ্ড:
| বিভাগ | ন্যূনতম GPA | পরীক্ষা বিষয় |
|---|---|---|
| বিজ্ঞান | GPA 5.00 | গণিত, পদার্থ, ইংরেজি |
| ব্যবসা শিক্ষা | GPA 4.50 | ইংরেজি, সাধারণ গণিত |
| মানবিক | GPA 4.00 | বাংলা, ইংরেজি |
৪. মৌখিক পরীক্ষা:
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়।
একাডেমিক মান ও ফলাফল
নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে:
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিবার শীর্ষ স্থান অর্জনকারীদের মধ্যে অনেকেই নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী।
- মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ সংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থী এখানে থেকে উত্তীর্ণ হয়।
- HSC রেজাল্টে প্রতি বছরই এই কলেজের GPA-5 প্রাপ্তির হার সবচেয়ে বেশি।
কেন নটরডেম কলেজে ভর্তি হবেন?
- দেশের সেরা কলেজগুলোর মধ্যে অন্যতম।
- ধারাবাহিকভাবে उत्कृष्ट একাডেমিক ফলাফল।
- যোগ্য ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক দ্বারা পাঠদান।
- কঠোর শৃঙ্খলা ও নৈতিক শিক্ষার পরিবেশ।
- সমৃদ্ধ সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বিকাশের সুযোগ।
- শক্তিশালী প্রাক্তন শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক (অ্যালুমনি অ্যাসোসিয়েশন)।
- উচ্চশিক্ষার জন্য দৃঢ় ভিত্তি তৈরি।
কিছু বিবেচ্য বিষয়:
- কঠোর শৃঙ্খলার কারণে অনেকের কাছে পরিবেশটি কিছুটা বেশি নিয়ন্ত্রিত মনে হতে পারে।
- একাডেমিক চাপ তুলনামূলকভাবে বেশি, যা মানিয়ে নিতে কঠোর পরিশ্রমী হতে হয়।
নটর ডেম কলেজের কৃতি শিক্ষার্থীবৃন্দ: যাঁরা আলোকিত করেছেন বিভিন্ন প্রাঙ্গণ
নটর ডেম কলেজ কেবল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নয়, এটি যেন এক নক্ষত্র তৈরির কারখানা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই বিদ্যাপীঠ থেকে বেরিয়ে এসেছেন অসংখ্য কৃতি শিক্ষার্থী, যাঁরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে রেখেছেন সাফল্যের উজ্জ্বল স্বাক্ষর এবং দেশ ও জাতিকে করেছেন গর্বিত। তাঁদের আলোয় আলোকিত হয়েছে সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান, সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রসহ জীবনের নানা প্রাঙ্গণ। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন অসংখ্য গুণীজন — চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, প্রশাসক, গবেষক, এবং রাজনীতিক। “Once a Notre Damian, always a Notre Damian” — এই বিশ্বাসে সবাই গর্বিত।
নটর ডেম কলেজের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন কৃতি শিক্ষার্থীর তালিকা নিচে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তুলে ধরা হলো:
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও গণমাধ্যম:
- হুমায়ূন আহমেদ: বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তী পুরুষ, নন্দিত কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তাঁর সৃষ্টি আজও কোটি বাঙালির হৃদয়ে অমলিন।
- আসাদুজ্জামান নূর: প্রখ্যাত অভিনেতা, আবৃত্তিশিল্পী, বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী এবং বর্তমান সংসদ সদস্য।
- তারেক আনাম খান: মঞ্চ ও টেলিভিশনের শক্তিমান অভিনেতা, নাট্য পরিচালক ও চলচ্চিত্র অভিনেতা।
- আনিসুল হক: জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, কলামিস্ট ও সাংবাদিক।
- শাইখ সিরাজ: দেশের কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, চ্যানেল আই-এর পরিচালক (বার্তা) এবং কৃষি উন্নয়ন বিষয়ক অনুষ্ঠানের পথিকৃৎ।
- ফরিদুর রেজা সাগর: মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
- নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু: বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রখ্যাত নাট্যজন, চলচ্চিত্র পরিচালক (গেরিলা) এবং সংগঠক।
- মোস্তফা সরয়ার ফারুকী: বর্তমান সময়ের অন্যতম মেধাবী ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালক ও নির্মাতা।
- কুমার বিশ্বজিৎ: বাংলা গানের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও সুরকার।
- শাফিন আহমেদ: জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘মাইলস’-এর প্রধান ভোকালিস্ট ও বেজিস্ট।
- হামিন আহমেদ: জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘মাইলস’-এর গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট।
- শুভ্র দেব: জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও সংগীত পরিচালক।
- বিপ্লব (প্রমিথিউস): জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘প্রমিথিউস’-এর প্রধান ভোকালিস্ট।
- হাসান মাসুদ: জনপ্রিয় অভিনেতা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা।
- সৈয়দ হাসান ইমাম: বরেণ্য অভিনেতা ও আবৃত্তিশিল্পী। (উল্লেখ্য, তিনি সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল ও নটর ডেম কলেজের ছাত্র ছিলেন)
- তাহসান রহমান খান: শিক্ষক, অভিনেতা, সংগীতশিল্পী, প্রাক্তণ সদস্য, ব্ল্যাক
- মাহফুজ আনাম: সম্পাদক, দি ডেইলি স্টার
শিক্ষা, গবেষণা ও অর্থনীতি:
- ডঃ আতিউর রহমান: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, লেখক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর।
- ডঃ আকবর আলি খান: স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, লেখক, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
- অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, সাহিত্য সমালোচক, কলামিস্ট ও লেখক।
- ডঃ আহসান হাবীব মনসুর: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই)-এর নির্বাহী পরিচালক।
রাজনীতি, প্রশাসন ও সামরিক বাহিনী:
- কামাল হোসেন: সংবিধান প্রণেতা, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ
- সালমান এফ রহমান: রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী।
- হাসানুল হক ইনু: বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রী
- জেনারেল আজিজ আহমেদ (অব.): বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান।
- এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত (অব.): বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান।
অন্যান্য ক্ষেত্র:
উপরিউক্ত ক্ষেত্রগুলো ছাড়াও অসংখ্য নটরডেমিয়ান সাফল্যের সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত আছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কৃতি চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, উদ্যোক্তা, গবেষক এবং বিভিন্ন বহুজাতিক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা
শেষ কথা
সব মিলিয়ে, নটরডেম কলেজ শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি আদর্শ ও জীবন গঠনের কেন্দ্র। যারা পড়াশোনার প্রতি আন্তরিক, সুশৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে চায় এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে, তাদের জন্য নটরডেম কলেজ নিঃসন্দেহে একটি সেরা পছন্দ। এখানকার শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা একজন শিক্ষার্থীকে জীবনের পরবর্তী ধাপগুলোতে সফলভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস জোগায়। এই কলেজ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা দেশ ও বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থেকে প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখেছে।
তুমি যদি নটর ডেম কলেজে ভর্তি হতে চাও, তবে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করো। নিয়মিত অধ্যয়ন, নিজেকে শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখা এবং মানবিক গুণাবলি অর্জনের চেষ্টা করো — তাহলেই তোমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব।